গাবলুর জানা-অজানা
Wednesday, October 22, 2014
ফিরে এসো
Monday, October 13, 2014
5:59
শেষ সাত দিন যাবত্ দুজনের মধ্যে কিছু একটা চলছে, ঠিক করে কথা বলছি না। তার মধ্যে, গত শুক্রবার জন্মদিন ছিল, আমি ভুলে গেছি, সহকর্মীরা পালন করার সময়, বিকেলে যখন আমাকে কনফারেন্স রুমে আসতে বলল, মনে পড়ল তখন, এসে একবার শুধু ওর চোখের দিকে তাকিয়ে শুভ জন্মদিন জানালাম। মুখে আমাদের দুজনের হাসি ছিল না।
ঠিক ছ'টার সময় বেরোবার আগে, আমি ওকে bye জানিয়ে বের হই বা দুজন একসাথে ফিরি । শুক্রবার, বেরোনোর সময়, ওকে চেম্বারে দেখতে পাইনি । এরকম হয় না, কোনো কাজ থাকলে, জানিয়ে দেয় আগে থেকে। তাছাড়া, শনি-রবি দুজনের প্রচুর শপিং করতে হত, আমার বিশেষ করে, তার জন্য কথা বলতে হত। আমি কিছু না জানিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। বাড়িতে এসে, ওর জন্মদিন উপলক্ষে একটা দামি ওয়াইনের বোতল খুলে তার ছবি পাঠালাম একটা mobile app এ । বললাম, " for you, on the occasion of your birthday." শনিবার সকালেও কোনো উত্তর না পাওয়ায় app খুলে দেখি, আমাকে ও list থেকে বের করে দিয়েছে । শনি-রবি, আমি চুপচাপ ছিলাম, ফোন ও করিনি।
আজ আপিসে গিয়েও আমি সারাদিন চুপ করে ছিলাম। বিকেলে ফেরার আগে মনে হল, আজ কথা বলা দরকার। আজ বিকেল 5:59, করিডরের এক প্রান্তে আমি, ওর চেম্বারের দিকে এগোতে যাব, আবছা আলোয় দেখলাম, করিডরের অপর প্রান্ত দিয়ে ও বেরিয়ে যাচ্ছে ।
Monday, October 6, 2014
শুভ বিজয়া
আমার নিকটতম অন্তরঙ্গ বন্ধু, শেষ কয়েক বছর ধরে রকি হিলে থাকে। আমরা স্কুলের হাফ প্যান্ট বন্ধু, গঙ্গার ধারে একসাথে বসে বিড়ি খাওয়া বন্ধু । সবে বিয়ে করেছে, ওর বৌ মার্কিন মুলুকে প্রথম পুজো কাটালো। ওদের রবিবারের রাত মানে আমার আজ সোমবারের অফিস শুরু করার আগে ভিডিও কলে বিজয়া সারার কথা ছিল । আমি কল করে পেলাম না। বন্ধুর বৌ জানালো যে ওরা জিমে, একটু পরে কল করছে । তা ভালো, দুজনেরই চেহারা একটু বেশিই ভালো । আমি দুজনকেই অভিনন্দন করব ভেবেছিলাম জিমে যাওয়া শুরু করেছে বলে। ভিডিও কল শুরু হতেই দেখলাম, বন্ধু জিম সেরে কোক দিয়ে JD খাচ্ছে আর বৌ, জুস দিয়ে Absolut খাচ্ছে । "শুভ বিজয়া " বলে শুরু করলাম।
Friday, September 26, 2014
কলরব
সেদিন সিওলে এলাম বেশ রাত করেই, দুপুরেই শুনেছি আগের রাতের যাদবপুরের ঘটনা, ছাত্রদের ওপর পুলিশের লাঠি, মনটা কেমন করছিল। গাড়িতে ভিডিওগুলো দেখছিলাম । সকালে টক আছে, একটু সেটা নিয়েও ভাবছি হাঁটতে হাঁটতে, গভীর রাতের কফি খেয়ে ফিরছি, বেশ হাওয়া দিচ্ছে । সিগনাল খেয়াল করিনি। হঠাত্ সামনে দিয়ে চার পাঁচটা দমকল গাড়ি জোরে আওয়াজ করে চলে গেলো। আওয়াজটা খুব চেনা লাগলো। এটা "The Dreamers " ছবির শেষ scene টার আওয়াজের মতো। রাস্তায় বিপ্লব নেমে এসেছে, পুলিশের গাড়ির আওয়াজ, মানুষের প্রতিবাদের আওয়াজ, মানুষের মিছিল আর Theo, Isabelle-র হাত ধরে ভিড়ে মিশে গেলো। আমি যাদবপুরের আগের রাতটা উপলব্ধি করলাম । আমার এতো সিনেমা দেখার কিছু ছাপ থাকে অবচেতনে ।
Tuesday, September 23, 2014
চলতে থাকি
আমি বাঙ্গালী । আমার জাত্যাভিমান আছে, গর্ব আছে। আমার গর্ব করার, অভিমান করার কারণ আছে, আমি ক্ষমতা রাখি, আমার অধিকার আছে । এই গর্ব দুটো রবি ঠাকুর পড়া, দুটো সত্যজিতের ছবি দেখা বা নেতাজীর নাম করে রক্ত গরম করা থেকে আসে না; কিমবা পাড়ার রকে, আড্ডায় সারা দুনিয়ার বিপ্লব ঘটিয়ে, পর নিন্দা- পর চর্চা করেও আসে না; এই গর্ব উত্তরাধিকার সূত্রে না পাওয়াই কাম্য; অভিমান, যা সব কিছু একসময় " ছিল " , শুধু তাতেই আটকে আমরা একটা যুগ কাটিয়েছি, বাঙ্গালীর এই বুদ্ধিমত্তায় আটক থাকার জন্য তার একসময়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ দায়ী, যুক্তি ছাড়া গা ভাসিয়ে দেওয়া দায়ী, সবকিছু জানা কিন্তু ভুল জানা দায়ী ।
গর্ব আসুক, অভিমান আসুক, আসা দরকার, রাখা দরকার। তবে অভিমান আসুক নিজেকে জানার মধ্য দিয়ে, নিজের মানসিক উত্কর্ষতার ভেতর দিয়ে, নিজেকে ভেঙ্গে গড়ার মধ্য দিয়ে।
যাদবপুরের ঘটনায় কলকাতার বুকে মানুষের অরাজনৈতিক প্রতিবাদ বোঝায় কেন বাঙ্গালী হিসেবে আমি গর্বিত। এরকমটাই হওয়া দরকার, আমরা তো বাঙ্গালী।